প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বসাহিত্যের এক উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। বাংলা ও বাঙালির অহংকার। প্রতিভা ও শ্রমের যুগলবন্দির সম্মিলনে তিনি অসাধারণ সব সাহিত্যকর্ম দিয়ে বাংলাসাহিত্যকে করেছেন ঐশ্বর্যমণ্ডিত। কালজয়ী এ কবি জীবন ও জগৎকে দেখেছেন অত্যন্ত গভীরভাবে। যা তার কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, গীতিনাট্য, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনী, সঙ্গীত ও চিত্রকলার সহস্রধারায় উৎসারিত হয়েছে। আবহমান বাংলার রূপ যেমন তার সাহিত্যসৃষ্টিতে ভাস্বর হয়েছে, তেমনই মানবতাবাদী বাণী তার সাহিত্যকে দিয়েছে অতুলনীয় মহিমা।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া বাণীতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর ১৬০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আমি তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। সাহিত্য, সঙ্গীত ও শিল্পের প্রতিটি শাখায় তার অনায়াস বিচরণ সত্যিই বিস্ময়কর। কবির সমস্ত সৃষ্টির মূলে নিহিত মানবতাবাদ তাকে বিশিষ্টতা দান করেছে। শান্তি ও মানবতার কবি রবীন্দ্রনাথ ছিলেন প্রকৃতির চিরন্তন সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যের সাধক।
শেখ হাসিনা বলেন, রবীন্দ্রনাথের জাতীয়তাবোধ বাঙালির অনন্ত প্রেরণার উৎস। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তার কবিতা ও গান মুক্তিকামী বাঙালিকে উদ্দীপ্ত করেছে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। জীবনের প্রতিটি সমস্যা-সঙ্কট, আনন্দ-বেদনা এবং আশা-নিরাশার সন্ধিক্ষণে রবীন্দ্রসৃষ্টি আমাদের চেতনাকে আন্দোলিত করে।
তিনি বলেন, কবিগুরু ছিলেন বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের একান্ত আপনজন। শিলাইদহ, শাহজাদপুর ও পতিসরে অবস্থানকালে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমানোন্নয়নে তার অবদান অনস্বীকার্য। গ্রামীণ দরিদ্র মানুষের জন্য তার পল্লীউন্নয়ন প্রচেষ্টা আজও আমাদের কাছে অনুসরণীয় হয়ে আছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি সম্মান জানিয়ে সিরাজগঞ্জে ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে কলোত্তীর্ণ এ কবির সৃষ্টিকে প্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। রবি ঠাকুরের অমর সৃষ্টি ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনাদর্শ এবং তার সৃষ্টিকর্ম শোষণ-বঞ্চনামুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে চিরদিন বাঙালিকে অনুপ্রাণিত করবে- এ আমার প্রত্যাশা। আমি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬০তম জন্মবার্ষিকীর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।